বাচ্চারা কত মাসে কথা বলতে পারে

বাচ্চারা কত মাসে কথা বলতে পারে – এই প্রশ্নটা নতুন বাবা-মায়ের মনে ঘুরপাক খাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। আপনার ছোট্ট সোনা কখন প্রথম শব্দটা উচ্চারণ করবে, কখন তার মিষ্টি মুখ থেকে "মা" বা "বাবা" ডাকটা শুনতে পাবেন, এই অধীর অপেক্ষাটা আসলে পৃথিবীর সব বাবা-মায়েরই থাকে। কিন্তু জানেন কি, এই কথার ফুল ফোটানোর পেছনে রয়েছে এক দারুণ মজার এবং জটিল প্রক্রিয়া? চলুন, আজ আমরা এই রহস্যের জট খুলি।

প্রথমেই বলে রাখি, প্রতিটি শিশুই কিন্তু আলাদা। কেউ একটু তাড়াতাড়ি হাঁটে, কেউ একটু দেরিতে। ঠিক তেমনই, কথা বলার ক্ষেত্রেও একেক শিশুর একেক রকম সময় লাগে। তাই আপনার বাচ্চার কথা বলা নিয়ে যদি একটু দুশ্চিন্তা হয়, তাহলে মনে রাখবেন, আপনি একা নন। এই যাত্রাটা দারুণ রোমাঞ্চকর, তাই না?

বাচ্চারা কখন কথা বলা শুরু করে?

আপনি হয়তো ভাবছেন, আপনার বাচ্চা কখন প্রথম মুখ খুলবে? আসলে, কথা বলা শুরু হওয়ার আগে অনেকগুলো ধাপ পার হতে হয়। এটা অনেকটা একটা সুড়ঙ্গ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার মতো — সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলোর দেখা মেলে, কিন্তু তার আগে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়।

জন্মের পর প্রথম কয়েক মাস: শব্দ আর সুরের খেলা

আপনার ছোট্ট সোনামণি যখন একদম নতুন পৃথিবীতে আসে, তখন থেকেই কিন্তু তার শেখা শুরু হয়ে যায়। বিশ্বাস হচ্ছে না? শুনুন তাহলে!

  • ০-৩ মাস: এই সময় বাচ্চারা মূলত কাঁদে। কান্নার মধ্য দিয়েই তারা তাদের চাহিদাগুলো বোঝায় – খিদে পেয়েছে, ঘুম পাচ্ছে, অস্বস্তি হচ্ছে, ইত্যাদি। এই কান্নাটাই তাদের প্রথম ভাষা। এর পাশাপাশি, দেখবেন তারা কিছু মজার আওয়াজ করে, যেমন – "আহ", "উহ"। এগুলোকে আমরা বলি 'কুইং' (Cooing)। মা-বাবার গলা শুনে তারা মাথা ঘোরায়, চোখ দিয়ে অনুসরণ করে। এটাই কিন্তু তাদের যোগাযোগের প্রথম ধাপ!

  • ৪-৬ মাস: এই সময়টাতে বাচ্চারা আরও একটু এগিয়ে যায়। তারা এখন 'ব্যাবলিং' (Babbling) শুরু করে। অর্থাৎ, "বা-বা-বা", "মা-মা-মা", "দা-দা-দা" – এই ধরনের আওয়াজগুলো করতে থাকে। যদিও এর কোনো নির্দিষ্ট অর্থ থাকে না, কিন্তু এই আওয়াজগুলো তাদের জিহ্বা, ঠোঁট এবং স্বরযন্ত্রের ব্যায়ামের মতো কাজ করে। তারা যখন হাসে বা আনন্দ পায়, তখন আরও বেশি আওয়াজ করে। আপনি যখন তাদের সাথে কথা বলবেন, তারা আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করবে।

প্রথম শব্দ এবং ভাষার ঝলক

এবার আসি সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্তের কথায়, যখন আপনার বাচ্চা প্রথম অর্থপূর্ণ শব্দ বলবে। এটা সত্যিই এক অসাধারণ অনুভূতি!

  • ৭-১২ মাস: এই সময় বাচ্চারা তাদের ব্যাবলিংয়ে আরও বৈচিত্র্য আনে। তারা বিভিন্ন স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের মিশ্রণ ব্যবহার করে। এই বয়সেই তারা প্রথম অর্থপূর্ণ শব্দ "মা" বা "বাবা" বলতে পারে। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে একরকম হয় না। কেউ কেউ হয়তো "দাদা", "জল" বা "বল" – এমন কিছু শব্দও আগে বলতে পারে। তারা আপনার নির্দেশ বুঝতে শুরু করে, যেমন – "টা-টা দাও", "বল দাও"। তারা তাদের নাম শুনলে সাড়া দেয়। দেখবেন, তারা আপনার বলা কথাগুলো নকল করার চেষ্টা করছে।

  • ১৩-১৮ মাস: এই সময়টাতে বাচ্চারা ২-৩টা শব্দ অর্থপূর্ণভাবে ব্যবহার করতে শেখে। তারা তাদের পছন্দের খেলনা বা খাবারের নাম বলতে পারে। যেমন, "দুধ", "খেলনা"। তারা যখন কিছু চায়, তখন আঙুল দিয়ে দেখায় এবং তার সাথে শব্দ ব্যবহার করে। যেমন, "পানি" বলে পানির বোতল দেখালো।

  • ১৮-২৪ মাস: এই বয়সে এসে শব্দভাণ্ডার দ্রুত বাড়তে থাকে। বাচ্চারা ১৫-২০টি বা তারও বেশি শব্দ বলতে পারে। তারা দুটি শব্দ ব্যবহার করে ছোট বাক্য তৈরি করতে শুরু করে, যেমন – "মা ভাত", "বাবা খেলনা"। তারা গল্পের বইয়ের ছবি দেখে নাম বলতে পারে, এবং ছোট ছোট নির্দেশ বুঝতে পারে।

  • ২৪-৩৬ মাস (২-৩ বছর): এই সময়টা ভাষার বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চারা ৩-৪টি শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে পারে, যেমন – "আমি ভাত খাবো", "মা আমাকে দাও"। তারা নিজেদের নাম বলতে পারে, এবং সহজ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারে। তারা এখন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে, যেমন – "আমার ভালো লাগছে না", "আমি খুশি"। তাদের শব্দভাণ্ডার ২০০-৩০০ শব্দ ছাড়িয়ে যেতে পারে!

ভাষার বিকাশে বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

Enhanced Content Image

আমাদের বাংলাদেশের শিশুরা সাধারণত বাংলা ভাষায় কথা বলা শুরু করে। যেহেতু আমাদের পরিবারগুলোতে দাদা-দাদী, নানা-নানী, চাচা-চাচী, মামা-মামী – সবাই মিলেমিশে থাকে, তাই শিশুরা ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সাথে মিশে বড় হয়। এটা তাদের ভাষার বিকাশে দারুণ সাহায্য করে। মা-বাবা, দাদা-দাদী বা অন্য কোনো আত্মীয় যখন বাচ্চার সাথে গল্প করে, ছড়া কাটে বা গান করে, তখন বাচ্চা অনেক নতুন শব্দ শোখে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

  • পরিবেশ: একটি শিশুকে কথা বলতে উৎসাহিত করার জন্য তার চারপাশে একটি উপযুক্ত পরিবেশ থাকা জরুরি। যে পরিবেশে কথা বলার সুযোগ কম, সেখানে শিশুর ভাষার বিকাশ ধীর হতে পারে।
  • অনুশীলন: কথা বলার জন্য অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। আপনার বাচ্চার সাথে নিয়মিত কথা বলুন, গল্প করুন, ছড়া শোনান।
  • অন্যান্য ভাষা: যদি আপনার পরিবারে একাধিক ভাষায় কথা বলা হয় (যেমন – বাংলা এবং ইংরেজি), তাহলে শিশুর ভাষার বিকাশ একটু দেরিতে হতে পারে। তবে এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, কারণ শিশুরা একসঙ্গে একাধিক ভাষা শিখতে পারে।

কখন চিন্তিত হবেন?

আমরা তো জানলাম যে, প্রতিটি শিশুর বিকাশের গতি আলাদা। কিন্তু কিছু পরিস্থিতিতে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কখন বুঝবেন যে আপনার বাচ্চার ভাষার বিকাশে একটু বাড়তি মনোযোগের প্রয়োজন?

  • ১২ মাসের মধ্যে কোনো কুইং বা ব্যাবলিং না করা।
  • ১৫ মাসের মধ্যে কোনো অর্থপূর্ণ শব্দ ব্যবহার না করা।
  • ১৮ মাসের মধ্যে কোনো শব্দভাণ্ডার না থাকা বা মাত্র কয়েকটি শব্দ বলা।
  • ২ বছর বয়সেও ২টি শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করতে না পারা।
  • যদি আপনার বাচ্চা অন্যদের কথা বুঝতে না পারে বা নির্দেশ অনুসরণ করতে না পারে।
  • যদি আপনার বাচ্চা অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতে আগ্রহী না হয়।
  • আগে শেখা শব্দগুলো ভুলে যাওয়া।

যদি এই লক্ষণগুলোর কোনো একটি আপনার চোখে পড়ে, তাহলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ বা স্পিচ থেরাপিস্টের সাথে কথা বলুন। মনে রাখবেন, যত দ্রুত সমস্যা চিহ্নিত করা যাবে, তত দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে।

ভাষার বিকাশে বাবা-মায়ের ভূমিকা

Enhanced Content Image

আপনার ছোট্ট সোনামণির ভাষার বিকাশে আপনার ভূমিকা অপরিসীম। আপনিই তার প্রথম শিক্ষক! চলুন জেনে নিই, আপনি কীভাবে তাকে সাহায্য করতে পারেন:

১. কথা বলুন, কথা বলুন, আরও কথা বলুন!

  • সবসময় কথা বলুন: আপনার বাচ্চার সাথে কথা বলুন, সে যখন খেলছে, খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে – প্রতিটি মুহূর্তেই। আপনি কী করছেন, কী ভাবছেন, সবকিছু বর্ণনা করুন। যেমন, "আমি এখন তোমার জন্য দুধ গরম করছি," বা "ওয়াও! কী সুন্দর একটা পাখি!"
  • প্রশ্ন করুন: সহজ প্রশ্ন করুন, যেমন – "এটা কী?", "তুমি কী চাও?" সে যখন উত্তর দেবে, তখন তাকে উৎসাহ দিন।
  • বর্ণনা করুন: যখন আপনারা বাইরে যাবেন, তখন চারপাশের জিনিসগুলো বর্ণনা করুন – "ওই যে দেখো একটা রিকশা যাচ্ছে!", "গাছে কত সুন্দর ফুল ফুটেছে!"

২. ছড়া, গান আর গল্পের জাদু

  • ছড়া ও গান শোনান: ছড়া ও গান শিশুদের ভাষার বিকাশে দারুণ সাহায্য করে। এতে তারা নতুন শব্দ শেখে, ছন্দের সাথে পরিচিত হয় এবং বাক্য গঠন বুঝতে পারে। “আয় আয় চাঁদ মামা”, “খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো” – এই ছড়াগুলো আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয়।
  • গল্প পড়ুন: প্রতিদিন রাতে বা দিনে আপনার বাচ্চাকে বই পড়ে শোনান। ছবির বই হলে আরও ভালো। ছবি দেখিয়ে দেখিয়ে গল্প বলুন। এতে তাদের কল্পনাশক্তি বাড়বে এবং শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে।

৩. ধৈর্য ধরুন এবং উৎসাহ দিন

  • ধৈর্য ধরুন: আপনার বাচ্চা যখন কথা বলতে চেষ্টা করবে, তখন তাকে সময় দিন। তাড়াহুড়ো করবেন না।
  • উৎসাহ দিন: যখন সে কোনো শব্দ বলবে বা চেষ্টা করবে, তখন তাকে প্রশংসা করুন। হাততালি দিন বা হাসুন। এতে সে আরও উৎসাহ পাবে।
  • ভুল ধরিয়ে দেবেন না: যদি সে ভুল উচ্চারণ করে, সরাসরি ভুল ধরিয়ে না দিয়ে সঠিক উচ্চারণটি বলুন। যেমন, সে যদি "গাড়ি" কে "দারি" বলে, আপনি বলুন, "হ্যাঁ, এটা একটা গাড়ি!"

৪. স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করুন

Enhanced Content Image

  • কম স্ক্রিন টাইম: মোবাইল, ট্যাব বা টিভির সামনে শিশুদের বেশি সময় রাখা উচিত নয়। স্ক্রিন টাইম ভাষার বিকাশে বাধা দিতে পারে, কারণ শিশুরা স্ক্রিনের সাথে একতরফা যোগাযোগ করে, যেখানে কোনো পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া হয় না।
  • মানসম্মত প্রোগ্রাম: যদি স্ক্রিন টাইম দিতেই হয়, তবে শিক্ষামূলক এবং বয়স-উপযোগী প্রোগ্রাম দেখান, যা শব্দ ও ভাষার বিকাশে সাহায্য করে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

প্রশ্ন ১: আমার বাচ্চা কখন প্রথম "মা" বা "বাবা" বলবে?

উত্তর: সাধারণত, বাচ্চারা ৭ থেকে ১২ মাসের মধ্যে তাদের প্রথম অর্থপূর্ণ শব্দ "মা" বা "বাবা" বলতে পারে। তবে এটি প্রতিটি শিশুর জন্য আলাদা হতে পারে। কিছু বাচ্চা একটু আগেও বলতে পারে, আবার কিছু বাচ্চা একটু পরেও বলতে পারে। মূল কথা হলো, এই সময়টাতেই তারা পরিচিত শব্দগুলোর অর্থ বুঝতে শুরু করে এবং সেগুলোর সাথে পরিচিত মুখ বা বস্তুকে মেলাতে পারে।

প্রশ্ন ২: আমার বাচ্চা যদি দেরিতে কথা বলা শুরু করে, তাহলে কি কোনো সমস্যা আছে?

উত্তর: সব শিশুর বিকাশের গতি একরকম হয় না। যদি আপনার বাচ্চা অন্যদের থেকে একটু দেরিতে কথা বলা শুরু করে, তা সবসময় কোনো সমস্যার লক্ষণ নাও হতে পারে। তবে, যদি ২ বছর বয়সের পরেও সে কোনো শব্দ না বলে বা আপনার নির্দেশের প্রতি সাড়া না দেয়, তাহলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ বা স্পিচ থেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করা উচিত। কিছু ক্ষেত্রে, দেরিতে কথা বলার পেছনে শারীরিক বা মানসিক কারণ থাকতে পারে, যা দ্রুত চিহ্নিত করা জরুরি।

প্রশ্ন ৩: বাচ্চারা কি একই সাথে একাধিক ভাষা শিখতে পারে?

উত্তর: হ্যাঁ, বাচ্চারা একই সাথে একাধিক ভাষা শিখতে পারে। যদি আপনার পরিবারে বাংলা এবং ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় কথা বলা হয়, তাহলে আপনার বাচ্চা দুটি ভাষাই শিখতে পারবে। তবে, এক্ষেত্রে ভাষার বিকাশ একটু ধীর হতে পারে, কারণ তাদের মস্তিষ্কে দুটি ভাষার তথ্য প্রক্রিয়া করতে হয়। ধৈর্য ধরুন এবং দুটি ভাষাতেই তাদের সাথে কথা বলুন। গবেষণায় দেখা গেছে, বহুভাষী শিশুরা পরবর্তীতে বেশ কিছু সুবিধা পায়, যেমন – সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উন্নত জ্ঞানীয় দক্ষতা।

প্রশ্ন ৪: আমার বাচ্চার কথা বলার ক্ষমতা বাড়াতে আমি তাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি?

উত্তর: আপনার বাচ্চার কথা বলার ক্ষমতা বাড়াতে আপনি অনেক কিছু করতে পারেন:

  • নিয়মিত কথা বলুন: আপনার বাচ্চার সাথে সারাক্ষণ কথা বলুন, সে কী করছে, আপনি কী করছেন, সবকিছু বর্ণনা করুন।
  • গল্প পড়ুন ও ছড়া শোনান: প্রতিদিন তাকে বই পড়ে শোনান এবং ছড়া-গান শোনান।
  • প্রশ্ন করুন: সহজ প্রশ্ন করুন এবং তাকে উত্তর দিতে উৎসাহিত করুন।
  • স্ক্রিন টাইম কমান: মোবাইল, ট্যাব বা টিভির সামনে বেশি সময় না দিয়ে তার সাথে সরাসরি কথা বলুন।
  • ধৈর্য ধরুন ও উৎসাহ দিন: সে যখন কথা বলার চেষ্টা করবে, তখন তাকে উৎসাহ দিন এবং তার ভুলগুলো সরাসরি ধরিয়ে না দিয়ে সঠিক উচ্চারণটি বলুন।

প্রশ্ন ৫: আমার বাচ্চা ঠিকমতো কথা বলছে না, কিন্তু সে সব বোঝে – এটা কি স্বাভাবিক?

উত্তর: হ্যাঁ, এটা বেশ স্বাভাবিক। অনেক সময় শিশুরা কথা বলার আগে সবকিছু বুঝতে শুরু করে। এটাকে বলা হয় "গ্রহনশীল ভাষা" (Receptive Language)। তারা আপনার নির্দেশ বোঝে, আপনার কথা শুনে প্রতিক্রিয়া দেখায়, কিন্তু নিজেরা হয়তো এখনো ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারে না। তাদের মস্তিষ্কে শব্দ এবং বাক্য গঠন প্রক্রিয়া হচ্ছে, কিন্তু মুখের পেশীগুলো হয়তো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। যদি আপনার বাচ্চা সব বোঝে কিন্তু কথা বলতে দেরি করে, তাহলে তাকে আরও বেশি কথা বলার সুযোগ দিন এবং তার সাথে কথোপকথন চালিয়ে যান। তবে, যদি ২ বছর বয়সের পরেও কথা বলার চেষ্টা না করে, তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

প্রিয় পাঠক, আপনার ছোট্ট সোনামণির কথা বলার এই যাত্রাটা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রতিটি ধাপই মূল্যবান এবং উপভোগ করার মতো। মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই তার নিজস্ব গতিতে শেখে এবং বিকাশ লাভ করে। তাই তুলনা না করে, আপনার বাচ্চার প্রতি মনোযোগ দিন, তাকে ভালোবাসুন এবং তার সাথে কথা বলুন। কারণ আপনার কণ্ঠস্বরই তার জন্য সবচেয়ে সুন্দর সুর!

আপনার বাচ্চার কথা বলার অভিজ্ঞতা কেমন? সে কখন প্রথম শব্দ বলেছিল? আমাদের জানান মন্তব্যের ঘরে। আপনার অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top